করোনায় দেশের শিল্প খাতের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ভবন ধসে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ৫৭ শতাংশ বেকার হয়ে পড়েছেন এবং এই ক্ষতিগ্রস্তদের করোনায় ৯২ শতাংশ সরকারের কোনো সহযোগিতাও পাননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘কভিড-১৯ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত এক হাজার ৪০০ শ্রমিকদের ডাটাবেইস থেকে ২০০ জনের নমুনা হিসেবে নিয়ে এই জরিপ চালায় সংস্থাটি।
এখনো ১৪ শতাংশ শ্রমিকের স্বাস্থ্য অবনতির দিকে রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫৮.৫ শতাংশ শ্রমিকের স্বাস্থ্য মোটামুটি স্থিতিশীল এবং ২৭.৫ শতাংশ সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে। ১৪ শতাংশ শ্রমিকদের মধ্যে বেশির ভাগই মাথা ব্যথা, হাত ও পায়ে ব্যথা, কোমর ব্যথা এমন বড় সমস্যা নিয়ে জীবন যাপন করছেন বলে জরিপে উঠে এসেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিরিন আখতার বলেন, দেশে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ হলে শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা আদায় করা সম্ভব। তা ছাড়া ক্ষতিপূরণ আইন স্বচ্ছভাবে তৈরি করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ মধ্যমআয়ের দেশে পরিণত হতে গেলে অবশ্যই তাকে শ্রমিকদের অধিকার, মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা, আপৎকালীন তহবিল গঠন করতে হবে।
গবেষণার জরিপ সম্পর্কে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, আট বছরেও শ্রমিকদের এই অবস্থা অত্যান্ত দুঃখজনক। অথচ এ দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের অক্সিজেন বলা হয় শ্রমিকদের। ঔপনিবেশিক মনমানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে এসে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি পূরণ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিয়াইনেন বলেন, শ্রম ইস্যুতে নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থায় উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে আর এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে আইন প্রণয়ন করতে হবে।’
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘আমাদের দেশে গড়ে প্রতিবছর প্রায় এক হাজারের মতো শ্রমিক বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। জীবিকার জন্য মানুষের যেন জীবনহানি না হয়। এ জন্য ন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়াও আরো অনেকেই বিভিন্ন কথা বলেন।