ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক, দ্বিনি ইলম প্রচারের মহান লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হয় দারুল উলুম বরুড়া। উজানির শায়খ কারি ইবরাহিম (রহ.)-এর পরামর্শে তাঁর শিষ্য মাওলানা আফতাবুদ্দিন (রহ.) ১৩২৭ হিজরি মোতাবেক ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে তা প্রতিষ্ঠা করেন। শতবর্ষের প্রাচীন এই ইসলামী বিদ্যাপীঠ আজ সারা দেশে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম বরুড়া নামে প্রসিদ্ধ। পাঁচ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ নোমান। দেশের কয়েকটি বৃহদায়তন দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি দারুল উলুম বরুড়া। কওমি শিক্ষা সিলেবাসের সর্বোচ্চ শ্রেণি দাওরায়ে হাদিস খোলা হয় ১৩৫৭ হিজরি মোতাবেক ১৯৩৬ ঈসায়ি সালে। এ পর্যন্ত এখান থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শিক্ষা সমাপন করেছে। ২০১৮ সালে ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ ইফতা-ও চালু করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সাবেক মুহাদ্দিস ও সিনিয়র শিক্ষক মুফতি মানসুর আহমাদ জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম বরুড়ায় বিভিন্ন বিভাগে অন্তত দুই হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী ইসলামী জ্ঞান অর্জন করছে। মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও তারা আরবি, উর্দু, ইংরেজি ও ফার্সি ভাষায় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। এখানে আবাসিক ব্যবস্থাপনায় এতিম ও দরিদ্রদের শিক্ষাগ্রহণের বিশেষ সুবিধা আছে। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (ঢাকা-বোর্ড)-এর অধীনে পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানে ৮০ জনের বেশি অভিজ্ঞ শিক্ষক পাঠদান করেন। শিক্ষকসহ মোট স্টাফ সংখ্যা ৯৪ জন। বৃহত্তর কুমিল্লা ও আশপাশ অঞ্চলের বহু দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার পেছনে এ মাদরাসার ভূমিকা অপরিসীম। দারুল উলুম বরুড়ার কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার সদ্যঃপ্রয়াত প্রিন্সিপাল আল্লামা নুর হুসাইন কাসেমী (রহ.), দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা মুমতাজুল করিম (বাবা হুজুর), জামিয়া নুরিয়া কামরাঙ্গীর চরের শায়খুল হাদিস আল্লামা সুলাইমান নোমানী এবং তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা আলী আকবর (রহ.) প্রমুখ